SATT ACADEMY

New to Satt Academy? Create an account


or

Log in with Google Account

Job

প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পর্যটক আকর্ষণের গুরুত্বপূর্ণ উপাদান’- ব্যাখ্যা করুন।

Created: 1 year ago | Updated: 5 months ago

বিশ্ব পর্যটনের নতুন গন্তব্য বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব

 

বিশ্ব পর্যটনের নতুন গন্তব্য বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব

বিশ্ব পর্যটনের নতুন গন্তব্য বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্বঅপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যই শুধু নয়, বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্বও পর্যটকদের কাছে অন্যতম এক আকর্ষণ। কক্সবাজার, কুয়াকাটা, সুন্দরবনের মতো প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত স্থানগুলো ছাড়াও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো বিশ্ব পর্যটনের নতুন গন্তব্য তৈরি করতে পারে বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের।

প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, সারাদেশে প্রায় সাড়ে ৪০০ প্রত্নতত্ত্ব স্থাপনা রয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে প্রায় ৫০টি প্রত্নস্থল খনন করে সেইসব এলাকার ইতিহাস পুনরুদ্ধার এবং স্থাপত্য কাঠামোর সংস্কার ও সংরক্ষণ হয়েছে। এসব ঐতিহাসিক নিদর্শন, জাদুঘর ও প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানকে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে পারলে প্রত্নতত্ত্ব পর্যটনে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। সরকারি ও বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ে সমন্বিত পদক্ষেপ নিলে বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে বলেও মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

জানা গেছে, সারাদেশে রয়েছে ১৭টি প্রত্নতত্ত্ব জাদুঘর। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগের লালবাগ জাদুঘর, বালিয়াটি জাদুঘর, রাজশাহী বিভাগের পাহাড়পুর জাদুঘর, মহাস্থান জাদুঘর, রবীন্দ্রকাচারী বাড়ি জাদুঘর, রংপুর বিভাগের তাজহাট জমিদার বাড়ি জাদুঘর, খুলনা বিভাগের রবীন্দ্রকুঠিবাড়ি জাদুঘর, এম.এম. দত্তবাড়ি জাদুঘর, রবীন্দ্রনাথের শ্বশুরবাড়ি, চট্টগ্রাম বিভাগের ময়নামতি জাদুঘর, জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘর এবং বরিশাল বিভাগের শেরেবাংলা স্মৃতি জাদুঘর অন্যতম।

 

প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতর প্রতি বছর নিয়মিতভাবে প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখননের মাধ্যমে প্রত্নস্থলের স্থাপত্য নিদর্শন, আবিষ্কার, ধ্বংসপ্রায় পুরাকীর্তিসমূহের সংস্কার ও সংরক্ষণ করছে। পুরাকীর্তি জাদুঘরে এগুলোর প্রদর্শনীও হচ্ছে। গবেষণা, প্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে জানতে বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে যাচ্ছে দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ব পর্যটনের নতুন গন্তব্য বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব

বিশ্ব পর্যটনের নতুন গন্তব্য বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্বতবে সারাদেশে প্রায় সাড়ে ৪০০ প্রত্নতত্ত্ব স্থাপনা থাকলেও টিকিট বিক্রি হয়ে থাকে ২৪টিতে। গত অর্থবছরে এই খাতে ৫ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। কয়েক বছর আগেও পানাম সিটিতে কোনও টিকিটের ব্যবস্থা ছিল না। গত বছর টিকিট চালুর পর এখান থেকে ৪০ লাখ টাকা আয় হয়েছে বলে জানা যায়।

 

প্রত্নতত্ত্ব স্থাপনাগুলো বিশ্বজুড়ে পরিচিত করতে পারলে পর্যটনে নতুন মাত্রা যোগ হবে মন্তব্য করে প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. মো আতাউর রহমান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সারাদেশের প্রায় সাড়ে ৪০০ প্রত্নতত্ত্ব স্থাপনা দেখতে দেশ-বিদেশের মানুষ আসেন। দিন দিন বিদেশিদের আগ্রহ বাড়ছে এগুলোর প্রতি। বৌদ্ধবিহারগুলোর প্রতি তাদের আগ্রহ বেশি। জাপান, চীন, কোরিয়া, শ্রীলংকার পর্যটকদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। এর মধ্যে প্রত্নতত্ত্ব নিয়ে গবেষণার কাজে নিয়োজিতদের সংখ্যা বেশি।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম ও হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. বদরুজ্জামান ভুঁইয়া কাঞ্চন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দেশের প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শনগুলো পর্যটন ক্ষেত্রে এখনও অনাবিষ্কৃত। প্রত্নতত্ত্ব পর্যটনের বিকাশের জন্য আগে সঠিক তথ্য ও গবেষণা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সম্পৃক্ত করতে হবে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে। তারা সম্পৃক্ত হলে ঐতিহাসিক স্থাপনাগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ও পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে অনেকাংশে।’

ড. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া কাঞ্চন আরও বলেন, ‘সঠিক তথ্য ও গবেষণার মাধ্যমে টেকসই পরিকল্পনা নিতে হবে। পুরাকীর্তি তথ্য বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে বেশি উদ্যোগ প্রয়োজন। পর্যটকের আগমনে পুরাকীর্তিসমৃদ্ধ এলাকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, সেই সঙ্গে বৃদ্ধি পাবে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড।’

বিশ্ব পর্যটনের নতুন গন্তব্য বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব

বিশ্ব পর্যটনের নতুন গন্তব্য বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্বপ্রত্নতত্ত্ব নির্দশন বিশ্বজুড়ে তুলে ধরা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে সরকারের ভূমিকা প্রয়োজন বলে মনে করেন ট্যুর অপারেটর জার্নপ্লাসের প্রধান নির্বাহী তৌফিক রহমান। তিনি একই সঙ্গে ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। জার্নপ্লাসের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য থেকে বছরে প্রায় দেড় হাজার পর্যটক প্রত্নতত্ত্ব নির্দশন দেখতে বাংলাদেশে আসেন বলেন জানা যায়।

টোয়াব পরিচালক বলেন, ‘প্রত্নতত্ত্ব নির্দশনের স্থানগুলোতে পর্যটকদের উপযোগী আন্তর্জাতিক মানের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। আন্তর্জাতিক সভা সেমিনারের মাধ্যমে সরকারি উদ্যোগে দেশের প্রত্নতত্ত্ব তুলে ধরা জরুরি। আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিতি বাড়লে পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে। প্রত্নতত্ত্ব নির্দশনগুলো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে এবং পর্যটন বিষয়ক পৃথক আরেকটি মন্ত্রণালয় করে দুটি মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ে উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন।’

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. মো. নাসির উদ্দিন বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘দেশের যেসব প্রত্নতত্ত্ব নির্দশন রয়েছে সেগুলো আমাদের পর্যটনের অন্যতম উপাদান। প্রত্নতত্ত্ব নির্দশনগুলোর মধ্যে প্রাচীন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মন্দিরসহ বিভিন্ন স্থাপনা রয়েছে। ২০১৫ সালে ঢাকায় আন্তর্জাতিক বুদ্ধিস্ট কনফারেন্স আয়োজন করা হয়। ওই সম্মেলনের মাধ্যমে প্রত্নতত্ত্ব নির্দশনগুলো তুলে ধরা হয়। এর ফলে এখন আগের চেয়ে অনেক বিদেশি বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব দেখতে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।তাই বেড়েছে বিদেশি পর্যটক।’

ট্যুরিজম বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘আমরা সংস্কৃতি মন্ত্রী ও প্রত্নতত্ত্ব অধিদফতরের মহাপরিচালকের সঙ্গে বৈঠক করে যৌথ পরিকল্পনা সাজিয়েছি। এর অংশ হিসেবে প্রত্নতাত্ত্বিক বিষয়াদি ভবিষ্যতে পর্যটন খাতে আরও বেশি সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।’

5 months ago

সাধারণ জ্ঞান

Please, contribute to add content.
Content

Related Question

View More